শীতের সকালে দৌড়ানো, উপকার নাকি ক্ষতি?

শীতের ঠান্ডা বাতাস, কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল আর কম তাপমাত্রা এই সব মিলিয়ে অনেকেই দৌড়ানো বন্ধ করে দেন। তবে চিকিৎসক ও ফিটনেস বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিক প্রস্তুতি থাকলে শীতকালই হতে পারে দৌড়ানোর সবচেয়ে আদর্শ সময়। কারণ ঠান্ডা আবহাওয়া শরীরকে বেশি সক্রিয় রাখে, বিপাকক্রিয়া ত্বরান্বিত করে এবং মানসিক-শারীরিকভাবে শরীরকে আরও শক্তিশালী করে তোলে। তাই সঠিক পোশাক পরে, নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে দৌড়ালে শীতের সকালের ব্যায়াম হতে পারে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

শীতে দৌড়ানোর উপকার

  • মেটাবোলিজম বাড়ায় ও দ্রুত ক্যালোরি খরচ করে: ঠান্ডায় শরীরকে উষ্ণ রাখতে অতিরিক্ত শক্তি লাগে। ফলে স্বাভাবিকের চেয়ে ক্যালোরি বেশি খরচ হয়, যা শরীরের চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
  • মানসিক দৃঢ়তা বৃদ্ধি পায়: শীতের সকালকে জয় করে দৌড়ানো মানসিকভাবে দৃঢ় হতে সাহায্য করে। এতে আত্মবিশ্বাস, শৃঙ্খলা ও মানসিক সহনশীলতা দুটোই বাড়ে।
  • হার্ট ও ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়ে: শীতে দৌড়ানোর সময় হৃদপিণ্ড ও ফুসফুস আরও বেশি কাজ করে। এতে রক্তসঞ্চালন ভালো হয়, হার্ট বেশি শক্তিশালী হয় এবং দীর্ঘমেয়াদে শারীরিক স্ট্যামিনা উন্নত হয়।

আরও পড়ুন:

দৌড়ানোর আগে যা অবশ্যই মানতে হবে

দৌড়ানোর আগে যা অবশ্যই মানতে হবে

  • ইনডোরে ওয়ার্ম-আপ করুন: কিছুক্ষণ ডায়নামিক স্ট্রেচ বা হালকা জাম্পিং করে শরীর গরম করুন।
  • আবহাওয়া দেখে বের হন: ঘন কুয়াশা, বরফ, বৃষ্টি বা অত্যধিক ঠান্ডার মধ্যে দৌড়ানো বিপজ্জনক।
  • পানি পান করতে ভুলবেন না: ঠান্ডায় তৃষ্ণা কম লাগে, তবুও শরীর দ্রুত ডিহাইড্রেট হয়।
  • মুখ ঢেকে রাখুন: খুব ঠান্ডা হাওয়ায় শ্বাস নিতে কষ্ট হলে স্কার্ফ বা মাস্ক পরুন।
  • দিনের আলোতে দৌড়ান: দৃশ্যমানতা ভালো থাকে এবং পিছলে পড়ার ঝুঁকি কমে।
  • ভেজা পোশাক বদলান: দৌড়ানোর পর দ্রুত শুকনো পোশাকে পরিবর্তন করুন, যাতে হাইপোথার্মিয়া না হয়।
  • হৃদরোগের ঝুঁকি থাকলে সতর্ক থাকুন: দৌড়ানোর গতি হঠাৎ বাড়াবেন না, ধীরে শুরু করে ধীরে বাড়ান।
  • শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা থাকলে মুখ ঢেকে দৌড়ান: অ্যাজমা বা ঠান্ডা বাতাসে সংবেদনশীল হলে অতিরিক্ত সতর্কতা প্রয়োজন।
  • যদি দৌড়ানোর সময় বুকে ব্যথা, মাথা ঘোরা, হাত-পায়ে অসাড়তা বা শ্বাস নিতে সমস্যা হয়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে থেমে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

শীতের সকালে দৌড়ানো, উপকার নাকি ক্ষতি?

শীতের সকাল মানেই দৌড়ানো বন্ধ করার কারণ নয়। বরং সঠিক পরিকল্পনা, উপযুক্ত পোশাক ও সতর্কতা মেনে চললে শীতকাল হতে পারে দৌড়ানোর সবচেয়ে উপকারী মৌসুম। এটি শুধু শরীরচর্চাই নয়; মেজাজ, ঘুম, সহনশীলতা এবং হৃদস্বাস্থ্য সবকিছুরই উন্নতি ঘটায়। তাই ইচ্ছাশক্তিকে সঙ্গী করে একদিন বের হয়ে দেখুন, শীতের সকালের দৌড় আপনার শরীর ও মনকে কতটা নতুন উদ্যমে ভরিয়ে দিতে পারে।

তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

জেএস/



from jagonews24.com | rss Feed https://ift.tt/lu98hEg
via IFTTT
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post