শোকরের নামাজ যেভাবে আদায় করবেন

আল্লাহ তাআলা আমাদের সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা, রিজিকদাতা। প্রতিনিয়ত আমরা তার নেয়ামত ভোগ করছি। আল্লাহ তাআলা চান বান্দা তার এই অগণিত নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করুক। মুখে তার প্রশংসা করুক, তার দয়া স্বীকার করুক, কাজেও তার বিধান ও নির্দেশনার আনুগত্য করুক। আল্লাহ তাআলা সম্পদ দান করলে তার নির্দেশ অনুযায়ী জাকাত দেওয়া, সদকা দেওয়া আল্লাহর তাআলার শুকরিয়া বা কৃতজ্ঞতা আদায়ের অন্তর্ভুক্ত। সুস্থ থাকলে নামাজ পড়া ও রোজা রাখাও আল্লাহর তাআলার শুকরিয়া আদায়ের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তাআলার নেয়ামত পেয়ে তা নিজের কৃতিত্ব বলে জাহির করা, দম্ভ ও অহংকার করা, ওই নেয়ামতের হক আদায় না করা আল্লাহ তাআলার না-শোকরি বা অকৃতজ্ঞতা গণ্য হয়।

এ ছাড়া আল্লাহ তাআলা যখন কোনো বিশেষ নেয়ামত দান করেন বা কোনো বিপদ থেকে মুক্ত করেন, কোনো খুশির সংবাদ আসে, তখন বিশেষভাবে আল্লাহ তাআলার নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা উচিত। এ রকম নেয়ামতের শুকরিয়ায় নামাজ আদায় করা মুস্তাহাব যে নামাজকে ‘সালাতুশ শুকর[’ বা শোকরের নামাজ বলা হয়।

আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, যখন তোমরা কোনো নিদর্শন দেখবে, তখন সিজদা করবে। (সুনানে আবু দাউদ: ১১৯৯) হজরত আবু বাকরা (রা.) বলেন, যখন নবিজির (সা.) কাছে কোনো খুশির সংবাদ বা এমন কিছু পৌঁছত, যাতে তিনি সন্তুষ্ট হতেন, তখন তিনি আল্লাহর দরবারে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে সিজদায় লুটিয়ে পড়তেন। (সুনানে আবু দাউদ: ২৭৭৬)

ইমাম আজম আবু হানিফা (রহ.) মত অনুযায়ী এসব বর্ণনায় ‘সিজদা’ বলে নামাজ বোঝানো হয়েছে। নবিজি (সা.) খুশির সংবাদ পেলে শুধু সিজদা নয়, বরং শোকরের নামাজ আদায় করতেন। তাই কোনো খুশির ঘটনা ঘটলে বা সংবাদ পেলে শোকরের সিজদা নয়, বরং নামাজ আদায় করাই মুসতাহাব। তবে হানাফি মাজহাবে অজুর সাথে কিবলামুখী হয়ে সিজদা দেওয়ার মাধ্যমেও শুকরিয়া আদায় করা যায়, এই পদ্ধতিও নাজায়েজ বা নিষিদ্ধ নয়।

শোকরের নামাজ আদায়ের পদ্ধতি অন্যান্য নফল নামাজের মতোই। শোকর আদায়ের নিয়তে কমপক্ষে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করলে তাই শোকরের নামাজ গণ্য হবে। কেউ চাইলে চার, ছয় বা আট রাকাত বা আরও বেশি সংখ্যক রাকাত নামাজও আদায় করতে পারে শোকর আদায়ের জন্য।

নবিজি (সা.) মক্কা বিজয়ের দিন মক্কাবাসীর উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার পর উম্মে হানির (রা.) বাসায় গিয়ে গোসল করে আট রাকাত নামাজ আদায় করেছিলেন। (সহিহ বুখারি: ৪২৯২) অনেকের মতে, নবিজি (সা.) বিজয়ের শোকর আদায়ের জন্য এ আট রাকাত নামাজ আদায় করেছিলেন।

শোকরের নামাজ পবিত্রতা ও অজুর সাথে আদায় করতে হবে এবং অন্যান্য নফল নামাজের মতো নিষিদ্ধ ও মাকরুহ সময়ে আদায় করা নিষিদ্ধ ও মাকরুহ হবে।

ওএফএফ/এএসএম



from jagonews24.com | rss Feed https://ift.tt/uP8UW72
via IFTTT
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post