৪.
তখন সন্ধ্যা নিঝুম হয়ে এলো আরও—শূন্য এসে কেবল ভাঙা হৃদয়ে চুমু খেল। আমি অবশ্য দাঁড়িয়েই আছি, বিগত প্রবল ভাঙনে যেমন...
স্পষ্ট একা!
শূন্য অবচেতনে কাঁপছে
সন্ধ্যার জানালায় প্রথম ভাঙন-
শূন্য, কাঁপা স্বরে জানালো—আর পারলাম না।
শূন্যেও তাকে আর খুঁজে পাবে না-
আত্মসমর্পণ করেছি।
পৃথিবীতে অথৈ সৈন্য-সামন্ত—রেজিমেন্ট রুল জারি।
ক্ষাণিক বাদে শেষ ভরসার আকাশ গুলিবিদ্ধ হলো—হয়তো মরে যাবে। যে আকাশে খুঁজতাম তাকে—সেই অবুঝ বিবর্ণ অবয়ব।
সব হারিয়ে খুব বিমর্ষ ভাঙাচোরা বোধ নিয়ে হাঁটছি রাতের গলিতে। সন্ধ্যার জানালা তখন বন্ধ, চারদিকে নীল জোয়ারের হাতছানি।
আমি আর দেখবো না পৃথিবীর বিচরণস্থলে তোমাকে কোনোদিন। আমি আর দেখবো না শূন্য ও আকাশে তোমাকে কোনোদিন। চিরন্তন শূন্য হলাম—অভিযোগহীন মৃত মমি, শূন্য ও আকাশের প্রতি—শূন্য আকাশের প্রতি।
৫.
সমুদ্র হয়ে ওঠার পর এই প্রথম অনুধাবন করলাম—স্থিরচিত্রের মতো স্তব্ধ আমি আজ। কথার অনির্ণীত কণাগুলো আলোকবর্ষ দূরে চলে যাচ্ছে নিঃশব্দে। সেখান থেকে পরাশক্তির মতো কী যেন সুর হয়ে ভেসে আসছে—গেঁথে যাচ্ছে বোধের সহজাত অন্তঃমোহনায়।
পৃথিবী বিধৃত নিষ্ঠুরতাগুলো খুব স্বাভাবিক মনে হচ্ছে।
যতই উপচে উঠছে, ততই মঙ্গলসূত্রে পরাবাস্তব জগতে নিজেকে সমর্পণ করছি।
সহজ স্বতঃস্ফূর্ত অভিপ্রায়ের নদীগুলো একে একে লীন হয়ে গেছে।
তুমিও লীন হয়ে যাচ্ছো সেই সমতলে।
সমুদ্রে কত সহস্র ভাসমান কণা—প্রত্যেকের মনোজগতিক অভিযোগ তোমার দিকেই ছুটে যাচ্ছে।
এই বধির সমুদ্র প্রকল্পের আওতায় আমি জিম্মি হয়ে গেছি।
নিজেকে সংযত রেখো, নদী।
বিলীন হওয়ার ক্রান্তিলগ্নে আবারও ঢাল হতে ছুটে আসবো।
৬.
এই তো চলছে জীবন—নিঃসাড়, ঘুমহীন,
দৃষ্টিহীন জেগে থাকার মতো—
মনে হয়, শব্দহীন ট্রাম এসে বুকে উঠে পড়েছে, মনস্তত্ত্বে প্রত্যাশাহীন বোধ খোঁজে—
এইসব কাগুজে আলোড়ন ধুলোয় মিশে গিয়ে
শিল্পে প্রাণসঞ্চার গাঁথে।
এমন পবিত্র ব্যথা কোথা থেকে আসে যে,
নিমেষেই মিশে যায় নক্ষত্রের দেশে—
শুধু মনে হয়, এ কেমন পবিত্র ব্যথা—
দূরে ভালোবাসে, জেগে থাকে।
আমি তো ছিলাম এমনি অপ্রকাশ্য এতটা কাল;
এখন প্রকাশ্য বলে—চলে এসো, আরও অন্ধকারে।
এসইউ/জিকেএস
from jagonews24.com | rss Feed https://ift.tt/4ifP9gR
via IFTTT