সকাল থেকে ট্রাফিক সামলে রাতে রক্তের ডোনার খুঁজছেন রায়হান

জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সামনে দিনরাত ছুটে চলেছেন এক তরুণ স্বেচ্ছাসেবক। নাম রায়হান আহমেদ কবির। প্রথমে এসেছিলেন রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় দগ্ধদের চিকিৎসায় বি নেগেটিভ ব্লাড দিতে, এরপর আর ফেরেননি।

সেখানে গিয়ে দেখা যায়, বার্ন ইনস্টিটিউটের সামনের বিশৃঙ্খল ট্রাফিক দেখে নিজেই দাঁড়িয়ে পড়েন গাড়ি নিয়ন্ত্রণে। আজ প্রায় চারদিন ধরে সকাল থেকে রাত অবধি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজ করছেন বিনা পারিশ্রমিকে। রাতে আবার দগ্ধ রোগীদের জন্য রক্তের ডোনার সংগ্রহে ছুটছেন।

রায়হান গাজীপুরের বোর্ড বাজার এলাকার বাসিন্দা। পড়াশোনা করছেন গাজীপুরের কাজী আজিমউদ্দিন কলেজে, অ্যাকাউন্টিং বিভাগের প্রথম বর্ষে। বাবা আবুল বাশার একটি সোয়েটার কারখানার কোয়ালিটি কন্ট্রোলার (সিইউসি), আর মা কল্পনা আক্তার কাজ করেন ফোল্ডিংম্যান হিসেবে। দুই ভাইবোনের মধ্যে রায়হানই বড়।

সকাল থেকে ট্রাফিক সামলে রাতে রক্তের ডোনার খুঁজছেন রায়হান

কথা হলে রায়হান জাগো নিউজকে বলেন, আমি সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ট্রাফিকের কাজ করি। এরপর রাতে ডোনার খুঁজি। কোনোদিন হাসপাতালেই থাকি, আবার কখনো আজিমপুরে ফুফুর বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে সকালে আবার চলে আসি। এটা আমার দায়িত্ব মনে করি, কেউ বলেওনি, পারিশ্রমিকও নিইনি।

এ কাজে পরিবারের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে বলেও জানান এ তরুণ। বলেন, আমার মা-বাবার দেওয়া টাকাতেই আমি খাবার খাই। তারা আমাকে সবসময়ই বলেন, মানুষকে সাহায্য করো, মানুষের দোয়াই সবচেয়ে বড়।

সকাল থেকে ট্রাফিক সামলে রাতে রক্তের ডোনার খুঁজছেন রায়হান

করোনাকাল থেকেই স্বেচ্ছায় নানা সেবামূলক কাজে যুক্ত রায়হান। রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার প্রশ্নে বলেন, আমি কোনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নই। যে কারও সংকট দেখলেই এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। মা-বাবার ভালোবাসাই আমার অনুপ্রেরণা।

বার্ন ইনস্টিটিউটের সামনের সড়কের চা দোকানি আমিনুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, সংকটময় মুহূর্তে রায়হানের মতো তরুণদের নিরলস স্বেচ্ছাশ্রম বারবার প্রমাণ করে—মানবিকতার শক্তিই সবচেয়ে বড়।

ইএআর/এমকেআর/এএসএম



from jagonews24.com | rss Feed https://ift.tt/O1TtNeA
via IFTTT
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post