শ্রমিকদল নেতার সুপারিশ না রাখায় অন্য কর্মকর্তাদের যোগদানে বাধা

বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে শ্রমিকদল নেতার সুপারিশ করা কর্মকর্তাকে পদায়ন না করায় নিয়োগ পাওয়া অন্য দুই কর্মকর্তাকে যোগদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। রোববার (২ মার্চ) দুপুরে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে এই ঘটনা ঘটে।

বরিশাল মহানগর শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষা বোর্ড কর্মচারী সংঘের সভাপতি শহীদুল ইসলাম তাদের বাধা দেন। এসময় নবনিযুক্ত কর্মকর্তারা যেন কক্ষে প্রবেশ করতে না পারেন সেজন্য তিনি সহযোগীদের নিয়ে কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন বলে জানা গেছে। একইসঙ্গে বোর্ড চেয়ারম্যানকে অবরুদ্ধ করার চেষ্টা করেন তিনি।

জানা গেছে, বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পদে ড. মো. কামরুজ্জামান কামাল ও উপ-বিদ্যালয় পরিদর্শক পদে হাসান মাহমুদকে পদায়ন করে মন্ত্রণালয়। আদেশ মোতাবেক রোববার বোর্ডে যোগ দিতে আসেন তারা। খবর পেয়ে শ্রমিকদল নেতা শহীদুল ইসলাম বোর্ডে তার অনুসারী কর্মচারীদের নিয়ে বিক্ষোভ সহকারে উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও উপ-বিদ্যালয় পরিদর্শক কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন।

শহীদুল ইসলাম বলেন, উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কামরুজ্জামান কামাল সরাসরি ফ্যাসিবাদের দোসর। তিনি বরিশালের সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর করে দেওয়া বিএম কলেজ শিক্ষক পরিষদের সদস্য ছিলেন। ওই কমিটি শিক্ষকদের ভোট ছাড়া হয়েছে। সাদিক কলেজ অধ্যক্ষকে তার বাসভবনে নিয়ে অফিস আদেশের মাধ্যমে কমিটি করেন। আল আমিন সরোয়ারকে ওই কমিটির সম্পাদক করা হয়েছিল।

শ্রমিকদল নেতার সুপারিশ না রাখায় অন্য কর্মকর্তাদের যোগদানে বাধা]

তিনি আরও বলেন, আমরা জানতে পেরেছি যশোর থেকে আসা উপ-বিদ্যালয় পরিদর্শক হাসান মাহমুদ আওয়ামীপন্থি স্বাধীনতা শিক্ষক সমিতির নেতা ছিলেন। ফ্যাসিস্টের দোসরদের শিক্ষা বোর্ডে ঠাঁই দেওয়া হবে না।

উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কামরুজ্জামান কামাল ও উপ-বিদ্যালয় পরিদর্শক হাসান মাহমুদ বলেন, আমরা যাতে যোগদান করতে না পারি সেজন্য তারা কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। পরে বোর্ড চেয়ারম্যান তালা খুলে যোগদান করিয়েছেন। আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সঠিক নয়।

বোর্ডের কর্মচারীরা জানান, বোর্ড চেয়ারম্যানকে অবরুদ্ধ করার চেষ্টা এবং নবনিযুক্তদের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার খবর পেয়ে মহানগর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন বোর্ডে যান এবং মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে যোগদান হতে আসা দুই কর্মকর্তাকে যোগদানে সহায়তা করেন।

এ বিষয়ে বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ইউনুস আলী সিদ্দিকী বলেন, শিক্ষা বোর্ডে যাদের বদলি অথবা নিয়োগ দেওয়া হয় তাদের সবাইকে মন্ত্রণালয় ও গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তের পর চূড়ান্ত করা হয়। তারপরও অভিযোগ উঠেছে দুই কর্মকর্তা আওয়ামী লীগের দোসর, যা নিয়ে কর্মচারীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন।

তিতি আরও বলেন, আসলে বোর্ডের কর্মচারীদের তদবির না মানলেই যাকে-তাকে ফ্যাসিস্ট আখ্যা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। এ বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়ে আলোচনা করে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

শ্রমিক দল নেতা শহীদুল ইসলামের বিরুদ্ধে এর আগেও বোর্ড চেয়ারম্যানকে অবরুদ্ধ করার অভিযোগ রয়েছে। একটি বিদ্যালয়ের সভাপতি পদে তার সুপারিশ করা ব্যক্তিকে নিযুক্ত না করায় তিনি অবরুদ্ধের ঘটনা ঘটিয়েছিলেন।

শাওন খান/এমএন/জিকেএস



from jagonews24.com | rss Feed https://ift.tt/Kb9ecXQ
via IFTTT
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post