দুঃখহীন পৃথিবী
দুঃখের সাথে হোক আমাদের বিচ্ছেদ,
মিলিয়ে যাক দূর সীমানায় দুঃখের মেঘ।
অশ্রু ঝরার সব নদী যাক শুকিয়ে,
কেবল শান্তির ফুল ফুটুক কোমল হৃদয়ে।
আমরা গড়ব নতুন এক দুঃখহীন পৃথিবী—
যেখানে দুঃখেরা নাম ধরে ডাকবে না,
বিষাদের ছায়া মাটিতে আর পড়বে না।
যেখানে অমাবস্যার রাতেও চাঁদ উঠবে,
তিমির ভেঙে সোনালি আলো জ্বালবে।
নীরব বাতাসে একমনে গান গাইবে সুখ,
ছন্নছাড়া হয়ে ঘুরবে যাবতীয় সব অসুখ।
যেখানে থাকবে না দুঃখের কোনো ছায়া,
থাকবে শুধু অনাবিল শান্তি ও ভালোবাসা।
****
নশ্বর ঠিকানা
কবর ব্যতীত মানুষের
অন্য কোনো স্থায়ী ঠিকানা নেই।
হে যাযাবর মানুষ—
তোমার কিসের এত অহংকার?
কাল যদি হঠাৎ ডাক এসে যায়,
তখন কোথায় তুমি পাবে ঠাঁই!
কবরের নিস্তব্ধতা
শোনায় নশ্বর প্রাণের গুঞ্জন,
মৃত্যু বলে দেয়—‘আমিই সত্য চিরন্তন
এবং কবর তোমার চিরন্তন ঠিকানা।’
ফুল ঝরে যায়, স্মৃতি ফিকে হয়
থাকে শুধু নীরব মাটি;
চাঁদের ক্ষীণ আলো মাঝেমাঝে দেখা দেয়।
সময় ফুরিয়ে গেলে সবই কালের ধুলো,
অতএব বাঁচো ভালোবাসায়;
মৃত্যুর আগে কিছু রেখে যাও।
****
মায়ের শূন্যতা
বহুদিন পরে ঘুম ভাঙলো মা তোমার মিষ্টি ডাকে,
অথচ চোখ মেলে দেখি, তুমি নেই পাশে।
মাঝেমাঝে ঘুমের মধ্যে স্বপ্নে দেখি তোমাকে,
ঘুম ভেঙে খুঁজলে মিলিয়ে যাও হাওয়ায় ভেসে।
এই শহরে তোমার মতো আপন আর কেউ নেই,
তুমি ছাড়া এ শহরে ভাসি পাল ছেঁড়া নৌকার মতোই।
মা—কতদিন তোমায় দেখিনা!
তোমার গাঁয়ের চেনা গন্ধে বহুদিন ভেজা হয় না।
নেওয়া হয় না তোমার শাড়ির তলে আর আশ্রয়,
বহুকাল শোনা হয় না তোমার শীতল কণ্ঠস্বর।
তোমায় দু’চোখ ভরে দেখার তৃষ্ণায়,
আমার দৃষ্টি ঝলসে যায়।
তোমার স্নেহের ছোঁয়া পাওয়ার প্রত্যাশায়,
আমার আদরলোভী সত্তা অপেক্ষায় থমকে দাঁড়ায়।
মা﹐তোমার স্নিগ্ধ শাড়ির আঁচলের ঘ্রাণ পেতে,
আমি সহস্র জনম রাজি অপেক্ষার প্রহর গুনতে।
****
ভালোবাসার সন্ধি
আমি কবিতা না, মূলত তোমাকে লিখি—
তোমাকে ভাঙাভাঙা অক্ষরে সাজাই
আমার ডায়েরির নিঃশব্দ পাতায়।
তারপর তুমি হয়ে যাও অনবদ্য এক কবিতা,
যে কবিতায় তুমি মেলে ধরো নিজেকে—
এবং আমি হারিয়ে ফেলি তোমাকে।
আর কতকাল তুমি কবিতা হয়ে ভাসবে,
আমার ক্ষুব্ধ﹐বিদীর্ণ হৃদয়ে—
বলো আর কতবার ছুরির আঘাত বসাবে?
প্রিয় এসো, এবার সন্ধি করি আমরা দুজনে—
আমি তোমাকে লিখবো নিপুণভাবে,
বিনিময়ে তুমি আমায় শুধু ভালোবাসবে।
এসইউ/এএসএম
from jagonews24.com | rss Feed https://ift.tt/jcMCE3Z
via IFTTT