অতিরিক্ত পানি পান করাও হতে পারে মারাত্মক

পানির অপর নাম জীবন। দৈনিক পর্যাপ্ত পরিমাণে পান না করলে শরীরে পানির ঘাটতি হয়। যাকে বলা হয় ডিহাইড্রেশন। শরীরে পানির ঘাটতি হলে বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দেয়। যার মধ্যে অন্যতম হলো ডায়রিয়া এমনকি কিডনি বিকল হয়ে যাওয়। তাই সুস্থ থাকতে পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরি। এক্ষেত্রে চিকিৎসকদের পরামর্শ হলো, প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দৈনিক ২-৩ লিটার পানি পান করা আবশ্যক।

অনেকেই শরীরে পানির ঘাটতি হবে ভেবে অতিরিক্ত পানি পান করেন। যা আবার শরীরের জন্য সমস্যার কারণ হতে পারে। মনে রাখবেন, কোনো কিছুই অতিরিক্ত ভালো নয়। পানি পানের ক্ষেত্রেও একথা কার্যকর। অত্যধিক পানি পানে মারাত্মক বিপদ ঘটতে পারে।

ওয়াটার ইনটক্সিকেশন কী?

অতিরিক্ত পান পান করার অভ্যাসকে চিকিৎসার ভাষায় বলা হয় ‘ওয়াটার ইনটক্সিকেশন’। এক্ষেত্রে অত্যধিক পানি পানের অভ্যাস থাকে রোগীর। এর ফলে রক্তে সোডিয়ামের ঘনত্ব পাতলা হয়ে যায়। সোডিয়াম একটি গুরুত্বপূর্ণ ইলেক্ট্রোলাইট, যা কোষের ভেতরে ও বাইরে তরলের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

কিডনি থেকে যদি অতিরিক্ত পানির নিষ্কাশন না ঘটে, সেক্ষেত্রে ওই বাড়তি পানি কোষে প্রবেশ করে। এর ফলে কোষগুলো ফুলে যায়। স্নায়ুর কার্যকারিতা, পেশির কার্যকারিতা ও শরীরে তরলের ভারসাম্য বজায় রাখতে সোডিয়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সোডিয়ামের ঘনত্ব পাতলা হয়ে এলে, কোষগুলোর স্বাভাবিক ক্রিয়াকর্মে বাধা পড়ে। যার প্রভাব পড়ে একাধিক অঙ্গের উপর।

আরও পড়ুন

কতটা মারাত্মক এই রোগ?

স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতি ঘণ্টায় ০.৮ থেকে ১ লিটার পর্যন্ত পানিই শোধন করতে পারে কিডনি। অল্প সময়ের মধ্যে এর চেয়ে বেশি পানি পান করলে শরীরে পানি ধারণ ক্ষমতায় প্রভাব পড়ে, ফলে পাতলা হয়ে যায় রক্ত।

কারণ শরীরে অত্যধিক পানি গেলে রক্তপ্রবাহের সঙ্গেও মিশে যায়। এ কারণেই ইলেক্ট্রোলাইটের ঘনত্ব পাতলা হয়ে যায়। এর ফলে কোষে পানি ঢুকে যায়। যা ফুলে গিয়ে টিস্যুগুলোর ক্ষতি করে।

এমনকি এতে প্রভাব পড়ে মস্তিষ্কেও। এক্ষেত্রে রোগীর মাথার যন্ত্রণা, মাথা ভারী হয়ে আসা কিংবা খিঁচুনি হতে পারে। সমস্যা গুরুতর হলে রোগী কোমায় চলে যেতে পারেন, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

ওয়াটার ইনটক্সিকেশনের লক্ষণ কী?

>> বমি বমি ভাব
>> মাথার যন্ত্রণা
>> হঠাৎ করে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়া
>> ক্লান্তি
>> পেশিতে যন্ত্রণা বা টান ধরা
>> ঘন ঘন টয়লেটে যাওয়া
>> হাত-পা ও মুখ ফুলে যাওয়া

দিনে কতটুকু পানি পান করবেন?

সাধারণত পুরুষদের দিনে ৩.৭ লিটারের বেশি পানি পান করা উচিত নয়। অন্য পানীয়ও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। নারীদের ক্ষেত্রে এই মাত্রা ২.৭ লিটার। সব ধরনের তরল খাবার এখানে গণ্য হবে। আর একবারে অনেকটা পানি পানের পরিবর্তে অল্প অল্প করে বেশ কিছুটা সময়ের ব্যবধানে পানি পান করা উচিত বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে দিনে ২-৩ লিটার পানি পানের সুপারিশ করেন চিকিৎসকরা, যা ৮-১২ গ্লাসের সমান। তবে যারা বেশি পরিশ্রম করেন, প্রচণ্ড গরমের মধ্যে থাকেন, শুষ্ক পরিবেশে বসবাস করেন, তাদের একটু বেশি পানি পান করা উচিত। তবে নিজে নিজে কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সূত্র: মেডিকেল নিউজ টুডে

জেএমএস/এমএস



from jagonews24.com | rss Feed https://ift.tt/dhPpSAm
via IFTTT
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post